বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন:
রাজশাহী, চাপাইনবাবগঞ্জ ও নওগা জেলার অধিকাংশ এলাকা এবং নাটোরসহ বৃহত্তর রংপুর, দিনাজপুর, বগুড়া ও পাবনা জেলার কিয়দংশ এলাকা জুড়ে বরেন্দ্র অঞ্চল অবস্থিত। দেশের অন্যান্য স্থানের তুলনায় এ অঞ্চলের চিত্র সম্পূর্ন ভিন্ন। রোদে পোড়া উত্তপ্ত উচু-নিচু বিস্তীর্ণ মাঠ, বাবলা, ক্যাকটাস ও গুল্মজাতীয় কিছু উদ্ভিদ ও মাঝে মাঝে তাল গাছের উপস্থিতি ছিল এই এলাকার সাধারণ দৃশ্য। এসব এলাকার জলবায়ু অত্যান্ত রুক্ষ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় এ অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অনেক কম। বিগত দিনে এখানকার কৃষি কাজ বৃষ্টি নির্ভর ছিল বিধায় বছরে একটি ফসল উৎপন্ন হতো যথাসময়ে বৃষ্টিপাত না হলে ফসল উৎপাদন ব্যবহত হতো। ফলে এসব এলাকার জনসাধারণ অত্যান্ত দরিদ্র ছিল। এমনকি অনেক যোদ্দার ব্যক্তিও ছিল অভাবী। তাই কাজের সন্ধানে এখানকার জনসাধারণ নিয়মিত অন্যা্ত্র গমন করত। মাটির গঠন এবং ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তরের কারণে এসব অঞ্চলে প্রচলিত গভীর নলকূপ দ্বারা সেচ কাজ সম্ভব ছিল না। ১৯৮৫সনে এ অঞ্চলের তৎকালীন বিএডিসির প্রকৌশলীরা এক ধরণের গভীর নলকূপ উদ্ভাবন করে। ভূ-গর্ভস্থ পানি দ্বারা সেচের সুযোগ সৃষ্টি করেন।এর প্রেক্ষিতে বরেন্দ্র এলাকায় সার্বিক উন্নয়নের জন্য রাজশাহী, চাপাই নবাবগঞ্জ ও নওগা জেলার ১৫টি উপজেলাকে সম্পৃক্ত করে বিএডিসি’র অধীনে বরেন্দ্র সমন্বিত এলাকা উন্নয়ন প্রকল্প (বিআইএডিপি) নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এ প্রকল্পের আওতায় ছিল সেচ কাজের জন্য গভীর নলকূপ স্থাপন, সংস্কারের অভাবে পানির ধারণ ক্ষমতা না থাকা পুকুর ও খাল পুন: খনন, বৃক্ষরোপন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য অত্যান্ত গ্রামাঞ্চলে সড়ক নির্মান। প্রকল্পটির সাফল্যর কারণে সমগ্র বরেন্দ্র এলাকার উন্নয়নের জন্য ১৯৯২সনে রাজশাহী, চাপাই নবাবগঞ্জ ও নওগা জেলার সমগ্র ২৫টি উপজেলাকে অন্তর্ভূক্ত করে বিএডিসির কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) গঠিত হয়। বিএমডিএ তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে নিম্নোক্ত লক্ষ্যগুলোকে উদ্দেশ্য করে তার কার্যক্রম শুরু করে:
সরকারের আর্থিক সহায়তায় উপরোক্ত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে বিএমডিএ কর্তৃক বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহনের ফলে বরেন্দ্র এলাকার কৃষি, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং পরিবেশের উন্নয়ন সহ জনগণের আর্থ সামাজিক অবস্থার ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়। এখন আর জনসাধারণকে কাজের সন্ধানে অন্যত্র গমন করতে হয় না। বিএমডিএ’র কার্যক্রমে সাফল্যের কারণে পর্যায়ক্রমে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের সকল জেলায় কর্তৃপক্ষ্যের কার্যক্রম বিস্তার লাভ করে।
এক নজরে ২০১৮-১৯ অর্থ বছর
◊সেচ কার্যক্রম পরিচালনা সংক্রান্ত-
◊ সেচযন্ত্রের সংখ্যা : (১) গভীর নলকুপ খনন-৪৬০টি, কমিশন-৪৬০টি, ব্যবহার-৪৬০টি।
(২) এল এল পি স্থাপন-৪৫টি, ব্যবহার-৪৫টি।
মোট স্থাপন-৫০৫টি, ব্যবহার-৫০৫টি (১০০%)
-১০০% সেচযন্ত্র সেচ র্কাযক্রমে ব্যবহার করা সম্ভব হয়েছে।
◊ সেচকৃত এলাকা : খরিপ-১→আউশ-৪২১ হেক্টর
খরিপ-২→ আমন-১২২০৫ হেক্টর
রবি→বোরো-১২.২৫ হেঃ, ভুট্টা-৩৯৮ হেঃ, গম-১৭৪ হেঃ, আলু-৩৯৯ হেঃ, সরিষা-৩৩৩ হেঃ, অন্যান্য-৩৪৬ হেঃ মোট-১৩৯০৩ হেক্টর।
র্সবমোট : ২৮২২৭ হেক্টর।
গভীর নলকুপ প্রতি সেচ এলাকা : ৩০ হেক্টর (রবি মৌসুম)
এল এল পি প্রতি সেচ এলাকা : ৩৪ হেক্টর (রবি মৌসুম)
◊সেচচার্জ আদায় : নির্ধারিত হার -১১০.০০টাকা/ঘন্টা (DTW & LLP)
◊বিক্রয় → এমভিইউ রিচার্জ : ২,৮৫,৭২,২৮৮.০০ টাকা
→ মানিরশিদে আদায় : ৯৫,৯৫০.০০ টাকা
→ মোট বিক্রয় : ২,৮৬,৬৮,২৩৮.০০ টাকা
◊ আদায়/মাঠে ব্যবহার → কার্ডে ব্যবহার : ২,৮৪,৫৮,৭৯৫.০০ টাকা
→ মানিরশিদে আদায় : ৯৫,৯৫০.০০ টাকা
→ মোট মাঠ ফেরত সেচচার্জআদায় :২,৮৫,৫৪,৭৪৫.০০ টাকা
→DTW হতে সেচচার্জ আদায় : ২,৬১,০১,৮৯২.০০ টাকা
→ LLP হতে সেচচার্জ আদায় : ২৪,৫২,৮৫৩.০০ টাকা
◊ গভীর নলকুপ প্রতি সেচচার্জ আদায় : ৫৬,৭৪৩.২৪ টাকা
◊ এল এল পি প্রতি সেচচার্জ আদায় : ৫৪,৫০৮.০০ টাকা
◊ একটি গভীর নলকুপে সর্বোচ্চ সেচচার্জ আদায় : ২,৭৯,৫০৭.০০ টাকা ( কাঁটাবাড়ী-৩, গোবিন্দগঞ্জ )
◊ একটি এল এল পিতে সর্বোচ্চ সেচচার্জ আদায় : ১,০৭,৮৩৩.০৪ টাকা ( জামুডাঙ্গা-২১০৩, সাদুল্লাপুর )
◊ একটি গভীর নলকুপে সর্বনিম্ন সেচচার্জ আদায় :২১৪৩.০৮ টাকা ( নুরপুর-১৫২০, সাদুল্লাপুর )
◊ একটি এল এল পিতে সর্বনিম্ন সেচচার্জ আদায় : ১২১৭৪.০০ টাকা ( দলদলিয়া-২, গাইবান্ধা )
(DTW-২৫% & LLP-৭৫%)
◊ সেচযন্ত্রের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের তথ্য :
→গাইবান্ধা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি : ১,১৩,০৯,৭৯২.০০ টাকা
→রংপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১ : ৪২,৮৪,৩০৯.০০ টাকা
→নেসকো ডিভিশন-১, গাইবান্ধা : ২,২৬,২১৪.০০ টাকা
→নেসকো ডিভিশন-২, গাইবান্ধা : ২,৩১,০৭৩.০০ টাকা
সর্বমোট=১,৬০,৫১,৩৮৮.০০ টাকা
◊ পরিশোধিত বিদ্যুৎ বিল আদায়কৃত সেচচার্জের -৫৬%
◊ জনবলের তথ্য :
(১) নিয়মিত : ২২ জন
(২) অনিয়মিত : ১১জন
(৩) মোট জনবল : ৩৩ জন
◊ হিসাব শাখা :
→বীজ বিক্রয় বিক্রয় : ১,৪০,৫৫০.০০ টাকা
→পার্টিসিপেসন ফান্ড : ১,৩৬,৩০০.০০ টাকা
→ বিবিধ রাজস্ব প্রপ্তি : ৩,৭১,৬৪০.০০ টাকা
→ দরপত্র ও অন্যান্য দলিল : ১২,০০০.০০ টাকা
মোট= ৩,১০,৬৮,৪৩৫.০০ টাকা
→বেতনভাতাদি : ১,৫১,৫৮,৪৬১.০০ টাকা
→সেচযন্ত্রের বিদ্যুৎ বিল : ১,৬০,৫১,৩৮৮.০০ টাকা
→অপারেটর ভাতা : ২৫,৮১,৪১৩.০০ টাকা
→সেচযন্ত্র মেরামত ও রক্ষনাবেক্ষণ: ১৫,৭৯,৮৭৫.০০ টাকা
→অন্যান্য পন্য ও সেবার ব্যয় : ৩৭,৯৭,৯৬৭.০০ টাকা
→ XF মেরামত ব্যয় লামে বিক্রয় : ১,৯৮,০০০.০০ টাকা
মোট= ৩,৯৩,৬৭,০৭৪.০০ টাকা
◊ ব্যাংক স্থিতি :
(ক) কনসোলিডেটেড ফান্ড : ৯,১৯,১২৮.৩৪ টাকা
(খ) জামানত হিসাব : ৩২,৬২,১৭১.০০ টাকা
(গ) অপারেটর ভাতা হিসাব :
(ঘ) প্রাপ্তি হিসাব : ৪,৮২,৬২৭.০০ টাকা
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস